একেএম ফখরুল আলম বাপ্পী চৌধুরী: এই সম্পদ এর সুরক্ষা সম্ভব। যার দায়-দায়িত্ব প্রত্যেকের নিজের হাতে। আর এজন্য প্রয়োজন অঙ্গিকার নিজের প্রতি নিজের অঙ্গিকার। যা হচ্ছে আত্ম সচেতনতা। নিজের শরীরকে নিজ নিয়ন্ত্রনে রাখব। যতদিন বেঁচে থাকব, ততদিন সুস্থ্য ও সুন্দর ভাবে বাঁচব। সুস্থ্য জীবন ধারার জন্য এই মূল্যবোধ শুধু গুরুত্বপূর্ণ নয়, জরুরিও অত্যাবশ্যকীয়।
বিশ্বে সফল যারা সুস্থ্য তারা। সুস্থ্য-স্বাভাবিক জীবনে নিজ স্বাস্থ্যের দিকে খেয়াল রাখাই সেরা বিকল্প।
আসুন- যাপিত জীবনভর শত ব্যবস্ততার মধ্যেও একদিন প্রতিদিন নিজের শরীরের জন্য ৩০ মিনিট সময় দেই। হেলথ ক্লাব ময়মনসিংহ এর স্লোগান এটাই।
যদি একটু সময় নিয়ে ভেবে দেখি, আমরা দেখব জীবন আমাদের একটাই। জম্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত জীবন ধারায় স্বাস্থ্যই সুস্বাস্থ্যের নিশ্চয়তা। যা মানুষের মৌলিক অধিকার।
মৃত্যুর তারিখ আগে লিখে তারপর জম্ম তারিখ লিখেন মহান সৃষ্টিকর্তা। আর নিশ্চিত মৃত্যুর গ্যারান্টির জন্য প্রয়োজন স্বাস্থ্য সচেতনতা। মানুষের জীবনে রোগ সুখ যন্ত্রণা থাকেই। থাকে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। আছে প্রতিষেধক ব্যবস্থা । রোগ নিরাময়, আরোগ্য লাভের চেয়েও জীবনের জন্য কাঙ্খিত পূর্বশর্ত হলো নিজেকে ভালবাসা, নিজের শরীরকে ভালবাসা, স্বাস্থ্য সুরক্ষা। ভালো থাকার চ্যালেঞ্জ সেটা। ভালো থাকার মানুষ হিসেবে আমরা স্বাস্থ্য সম্পর্কে জানি, যা মৌলিক ধারণা। কিন্তু জীবন যুদ্ধে নিজেকে ব্যাহত রাখা মানুষের সামনে থাকে অজস্রর ও অনন্ত জীবন জিজ্ঞাসা। সে সব এর উত্তর খোঁজতেই সদা সক্রিয়।
চাকরি,ব্যবসা,রাজনীতি, সামাজিক খ্যাতি ইত্যাদি প্রবণতার পেছনে ছুটছে মানুষ। উদ্দেশ্য টাকা পয়সা। যার পেছনে ছুটতে গিয়ে মানুষ নিজের অগোচরেই নিজ শরীরের প্রতি যতœবান হবার সময় পায় না। শরীরের প্রতি অযত্নশীল হয়ে পড়ায় দেখা যায় স্বাস্থ্য সমস্যা, স্বাস্থ্যগত বিপর্যয়।
শরীরে বাসা বাধে ডায়াবেটিকস,প্রেসার, নানা জটিলতা ও ঝুকি। নিজের অজান্তেই শরীরকে গ্রাস করে রোগবালাই। অনিয়মিত খাদ্যাভাস,অনিয়মিত ও অপর্যাপ্ত ঘুম, শরীরকে দুর্বল করে দেয়। শরীরে জমতে থাকে বাড়তি চর্বি ও ভূড়ি।
জীবন সংগ্রামে সফলতার উচ্চ শিখরে পৌঁছা,সামাজিক অবস্থানের জন্য কোটি কোটি টাকার পিছনে ছুটে ছুটে ক্লান্ত প্রাণ মানুষের জীবনে নেমে আসে সুখের অসুখ। অসুখ বিসুখের রোগযন্ত্রবায় পড়ে মনে হয় ভুল, সবই ভুল। শরীরবৃত্তের অবক্ষয়ের মধ্যে পড়ে মনে মনে জম্ম নেয় বিষন্নতা-আক্ষেপ।। হায় যদি একটু সময় দিতাম নিজেকে,নিজের শরীরকে তাহলে বোধ হয় আজকে ভালো থাকতাম। সুস্থ থাকতে পারতাম।
সেই ভবিষ্যৎ ব্যর্থতার পথ রুদ্ধ করা মোটেও অসম্ভব নয়। গবেষণায় এটা স্বীকৃত যে ব্যায়াম স্বাস্থ্যের জন্য নিয়ামক।
হেলথ ক্লাব ময়মনসিংহ এর পটভূমিকা তাই স্বাস্থ্য সচেতনতায় এক নতুন মাত্রা। যার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য মানুষ। মানুষের ভাল থাকা। স্বাস্থ্য এক অগ্রাধিকার এই প্রতিশ্রুতিতে সামাজিক আন্দোলন বিকাশ। ভালো আছি। ভালো হোক।
সুস্থ্য স্বাস্থের অধিকারী মানুষই অর্থবহ জীবনের অধিকারী। সেই জীবন বিকাশেই হেলথ ক্লাব ময়মনসিংহ।
মানুষের জন্য,জীবনের জন্য এর গোড়াপত্তন পথ চলা অঙ্গিকার।
হেলথ ক্লাব ময়মনসিংহ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য:
১. হেলথ ক্লাব ময়মনসিংহ একটি স্বাস্থ্য সচেতনা চিকিৎসা সেবা, সুস্বাস্থ্য নিশ্চিতকরণ মানব কল্যাণমুলক সামাজিক প্রতিষ্ঠান।
২. স্বেচ্ছাসেবী,অলাভজনক,অরাজনৈতিক সংস্থা হিসেবে হেলথ ক্লাব ময়মনসিংহ একটি মানবিক কল্যাণ ধর্মী উদ্যোগ।
৩. বিধিবদ্ধ নিয়মতান্ত্রিকতা, যথাযথ ব্যবস্থাপনা কমিউনিটির অংশীদারিত্বে ক্লাবটিতে এর সদস্যদের স্বার্থ সংরক্ষিত।
৪. শরীর-স্বাস্থ্য-মন মানুষের এই তিন অনুষঙ্গের জন্য প্রয়োজনীয় কর্মসূচি,স্বাস্থ্যসেবা,পরার্মশ,স্বাস্থ্য চর্চা,খেলাধূলা,চিত্তবিনোদন, সাংস্কৃতিক চর্চার ব্যবস্থা।
৫. মনোরম পরিবেশে সুবিশাল জায়গায় হেলথ ক্লাব এর প্রতিষ্ঠা ও উন্নয়ন।
৬. স্বাস্থ্য সচেতন মানুষের মধ্যে যোগসূত্র স্থাপন এবং সমাজ বিকাশ।
৭. অংশীজন এবং উপকারভোগীদের সমন্বয়ে গণতান্ত্রিক উপায়ে হেলথ ক্লাব ময়মনসিংহের গতিশীল পরিচালনা নিশ্চিত করা।
৮. প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা, রাজনৈতিক ও সামাজিক ব্যক্তিত্ব, সমাজ সেবক ও মানবিক উদ্যোগে অংশ নেয়া সচেতন মহল হেলথ ক্লাব এর পৃষ্ঠপোষকতায় থাকবেন।
৯. মানুষের সুস্বাস্থ্য সুরক্ষায় হেলথ ক্লাব ময়মনসিংহ এর ভূমিকাকে দেশব্যাপী একটি মাইলফলক ও মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা।
১০. ক্লাবের উদ্যোগ, পৃষ্ঠপোষকতা, স্বেচ্ছা শ্রম, ও পরামর্শমুলক কাজে অংশগ্রহণকারীরা মানবিকতা ও মানবতার কর্মী হিসেবে যে ভূমিকা ও অবদান রাখবেন তার মূল্যায়ন ও স্বীকৃতি প্রদান।
১১. সকলের সুবিধার্থে হেলথ ক্লাব ২৪ ঘন্টা খোলা থাকবে।
১২. সদস্যদের স্বার্থে বিশেষ চিকিৎসকদের প্যানেল প্রতিদিন পর্যায়ক্রমে দায়িত্ব পালন করবেন।
১৩. হেলথ ক্লাবে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত পরামর্শদানের জন্য প্রশিক্ষিত স্বেচ্ছাসেবী, স্বাস্থ্যকর্মী ও বিশেষ চিকিৎসক প্যানেল থাকবে।
১৪. শরীরচর্চার বিভিন্ন উপকরণ, যোগব্যায়াম, মেডিটেশন করার জন্য বিস্তৃত মেড, অত্যাধুনিক ব্যায়ামাগার ও প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা থাকবে।
১৫. প্রতিবেলা, প্রতিমুহূর্ত প্রেসার মাপা, ডায়াবেটিকস পরিক্ষা, ব্লাড গ্রুপ পরিক্ষার ব্যবস্থা, রোগ নির্ণয়ের যাবতীয় পরিক্ষা ও যন্ত্রপাতির ব্যবস্থা।
১৬. ২৪ ঘন্টা স্বেচ্ছাসেবী ডাক্তার ও নার্সিং ব্যবস্থা করা।
১৭. শরীরের উচ্চতা, ওজন ও রোগ অনুযায়ী ব্যায়াম ও খাবার তালিকা প্রণয়ন ।
১৮. প্রতিনিয়ত বেন মিশিনে নিমপাতা, তুলসি পাতাসহ অন্যান্য ঔষধি পাতা ও ফলের জুস পরিবেশন।
১৯. প্রতি সপ্তাহে স্বাস্থ্য বিষয়ক সেমিনার, বিভিন্ন দিবসে র্যা লী, মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন কর্মসুচি বাস্তবায়ন।
২০. হেলথ ক্লাব সদস্যদের বাইসাইকেল চালানো আবশ্যিক। যা একটি আন্দোলন হিসেবে পরিগনিত হবে।
২২. ইনডোরে দাবা কেরাম, বাস্কেটবল সহ অন্যান্য খেলার সুবিধা।
২৩. প্রতিমাসে আনন্দ ভ্রমন, নৌ-ভ্রমন, ট্রেন ভ্রমন সহ বর্হিবিভাগীয় কর্মসুচি।
২৪. চিত্তবিনোদন, কবিতা আবৃত্তি, গান,নাচ, নাটক, আড্ডাসহ স্বাংস্কৃতিক আয়োজন।
২৫. জীবন প্রণালীকে যদি তিন ভাগে ভাগ করা যায় তাহলে শেষ ভাগ টাই হল নিসঙ্গতা ও শারিরিক অবস্বাদ বা প্রতিবন্ধকতা। জীবনের এই সময়েই প্রয়োজন মানসিক প্রশান্তি। রিফ্রেসমেন্ট। সিনিয়র সিটিজেনদের জন্য সেই সময়ের প্রয়োজনীয় সব শারীরিকচর্চা নিশ্চিত করা।
২৬. সব বয়সের নারী ও পুরুষের স্বাস্থ্য সচেতনতা বিকাশ ও চর্চায় হেলথ ক্লাব ময়মনসিংহ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
২৭. হেলথ ক্লাব এর কনসেপ্ট এর প্রতি আস্থাবান যে কেউ ক্লাবের সাধারণ সদস্য পদ লাভের জন্য আবেদন করার অধিকারী হবেন। একাকালীন ৫’শত টাকা ও মাসিক চাঁদা ১০০’শত সহ শর্ত প্রযোজ্য।
২৮. সর্বমহলে গ্রহণযোগ্য কোন বিত্তবান, দানবীর যদি হেলথ ক্লাব এর জন্য জায়গা(জমি)’র ব্যবস্থা করেন তবে তাকে ক্লাব এর প্রতিষ্ঠাদাতা হিসেবে আজীবন গণ্য করা হবে।
২৯. পৃষ্ঠপোষকতায় বিশেষ অনুদান প্রদানকারীও বিশেষ সম্মাননায় ভূষিত হবেন।
৩০. আমাদের ভাবনা সুপ্রসন্ন, আমরা যেতে চাই বহুদূর, সেজন্য নিজেকে সুস্থ্য রাখতে হবে।
৩১. আর কি হলে আপনার হেলথ ক্লাবটি ঘোঁছানো হবে, পরিচ্ছন্ন হবে। আপনি একজন সচেতন নাগরিক, আপনার মূল্যবান মতামত এর অপেক্ষায় হেলথ ক্লাব, আপনার অদম্য চেষ্টা ও নেতৃত্বে এগিয়ে যাক হেলথ ক্লাব।
আপনার সুদক্ষ নেতৃত্বের অপেক্ষায় হেলথ ক্লাব ময়মনসিংহ।
অস্থায়ী ঠিকানাঃ ময়মনসিংহ বিভাগীয় প্রেসক্লাব
মীরপ্লাজা(৩য় তলা),৮৮সিকে ঘোষরোড,সদর,ময়মনসিংহ।
।
Leave a Reply