শরাফত আলী শান্ত: প্রতিবন্ধীরাও রেহাই পাচ্ছে না ভূমিদস্যুদের হাত থেকে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, প্রভাবশালী ব্যক্তিবর্গ ও রাজনীতিবিদদের ছত্রছায়ায় দেশে সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে ভূমিদস্যু। কোন না কোন ইস্যুতে আইনের ফাঁকে পার পেয়ে যাচ্ছেন তারা।
দেশরত্ন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিবন্ধীদের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে বলেছেন। কিন্তু ভূমিদস্যুদের খপ্পরে পড়ে প্রত্যন্ত অঞ্চলের নিরীহ মানুষগুলোকে নিঃস্ব হয়ে বরণ করে নিতে হচ্ছে অসহায়ত্ব।
ময়মনসিংহের ভাবখালী ইউনিয়নের ভাবখালী গ্রামের মৃত. আঃ সালেকের প্রতিবন্ধী সন্তান মোঃ আবুল কালাম(৬৫) ও রেহাই পায়নি ভাবখালীর ভূমিখেকু রেজাউল করিমের হাত থেকে। দীর্ঘদিন ধরে প্রায় ১৯ শতাংশ জমি ভূমিখেকু রেজাউল করিমের বিভিন্ন কৌশলে দখল করার চেষ্টা করছে। এতে বারবার হয়রানির শিকার হচ্ছে প্রতিবন্ধী আবুল কালাম।
প্রতিবন্ধী আবুল কালাম অভিযোগ করেন, পৈতৃক সম্পত্তিতে পাওয়া উক্ত জমি আমার নিজ নামে বিআরএস ও নামজারি থাকা সত্ত্বেও আমার প্রতিনিধি কারো মাধ্যমে চাষাবাদ করতে পারছি না। জমিতে চাষাবাদ করতে গেলে রেজাউল করিম তাদের মারধর করেন। বিভিন্নভাবে ভয়-ভীতি ও হুমকি দিয়ে আসছে। এমনকি আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে।
প্রতিবন্ধী আবুল কালাম আরো অভিযোগ করেন, রেজাউল করিম একজন ভূমিদস্যু। আমার জমির মতো এলাকার অনেকের জমি নিয়ে তার সাথে বিরোধ রয়েছে।
সরেজমিনে জানা যায়, প্রতিবন্ধী আবুল কালামের কাছ থেকে তার ভাইয়ের ছেলেরা বিভিন্ন প্রলোভনে জমি না নিতে পেরে তার বৃদ্ধ মা’র (মৃত. সাহারুন নেছা) কাছ থেকে জমি লিখে নেয়। পরবর্তীতে তারা ভুল বুঝতে পেরে তাদের চাচা প্রতিবন্ধী আবুল কালামকে জমি ফিরিয়ে দেয়। কিন্তু এরই মাঝে তার ভাইয়ের ছেলেদেরকে প্রলোভন দেখিয়ে ভাবখালীর ভূমিখেকু নামে পরিচিত রেজাউল করিম তা দখল করার চেষ্টা করেন। তার ভাইয়ের ছেলেরা এর প্রতিবাদ করলে প্রতিবন্ধী রেজাউল করিমসহ তাদেরকে মৃত্যুর হুমকি প্রদান করে আসছে। স্থানীয়ভাবে কয়েকবার দরবারে বসলেও এর কোন সুরাহা মেলেনি প্রতিবন্ধী আবুল কালামের। গত ১৪ জানুয়ারী’২০২১ইং তারিখে আবুল কালাম বাদী হয়ে কোতোয়ালী থানায় একটি জিডি করেন, জিডি নং-১২৩০। দৈনিক মাটি ও মানুষ কার্যালয়ে এসে প্রতিবন্ধী আবুল কালাম অভিযোগ করেন এবং কাগজপত্র দেখান।
অভিযোগ সততা জানার জন্যে রেজাউল করিমের সাথে মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি দলিলের কাগজপত্র এখনো যাচাই করিনি। যদি প্রতিবন্ধী আবুল কালামের কাগজপত্র সঠিক থাকে তাহলে আমি কথা দিলাম আমি কোন দিন ঐজমিতে যাবো না এবং তার কাছে ক্ষমা চেয়ে আসবো।
অভিযোগ তদন্তকারী এসআই হুমায়ন ফোনালাপে বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত আছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোন পক্ষই আমাকে সঠিক প্রমাণাদি বা দলিলপত্র দেখাতে পারিনি। যাতে আইন শৃঙ্খলার অবনতি না হয় সেজন্য যেই কল করেন আমি সঙ্গে সঙ্গে ঘটনা স্থলে যাই। আমি বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে অবগত করবো।
প্রতিবন্ধী আবুল কালাম অভিযোগ করেন, বিষয়টি নিয়ে বারবার ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুস সাত্তার সোহেলের সাথে যোগাযোগ করে অভিযোগ করার পরেও, উক্ত চেয়ারম্যান রেজাউল করিমের পক্ষ নিয়ে কথা বলেন।
অভিযোগের সততা যাচাইয়ের জন্যে চেয়ারম্যান আব্দুস সাত্তার সোহেলের সাথে যোগাযোগ করার জন্যে মোবাইলে কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
Leave a Reply